পিএইডির এক বছর
Oxford Life

পিএইডির এক বছর

May 27, 2020   |    3491


আজ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯। আমার অক্সফোর্ড পিএইচডি জীবনের প্রথম বর্ষপূর্তি। গত বছর এই দিনে একটা এয়ারবাস এ৩৮০- পিঠে চড়ে লন্ডন হিথ্রো এয়ারপোর্টে নেমেছিলাম। বাস ধরে রাত -টা নাগাদ অক্সফোর্ডে অমিতার বাসার নীচে গিয়ে দাঁড়ালাম। অমিতা আর ম‍্যাক আমার লাগেজ সাথে নিয়ে ইফতির বাসস্থানউল্ফসনকলেজে নিয়ে গেলো। কারণ, তখনো ব‍্যালিয়ল কলেজে আমার রুমটা ফাঁকা হয়নি। ইফতি এক সপ্তাহের জন‍্য আমেরিকায় ছিলো। আমি তার রুমে দিনের পরজীবী হয়ে গেলাম। কিন্তু, শর্ত একটাইরুমের হিটার চালানো যাবে না।


আমি ভাবলাম, কি সমস‍্যা? এই শীতে হিটার কেন চালানো যাবে না? মাস খানেক পর বুঝতে পারলাম, ইফতির রুমে বেশ দামী কিছু কুকাবুরা ব‍্যাট আছে। হিটার চালালে সেই ব‍্যাটগুলোর কাঠ ঘেমে যায়। ব‍্যাট বনাম বন্ধুর লড়াইয়ে ব‍্যাট বিজয়ী হলো। আমি চার রাত ইফতির রুমে কম্বলমুড়ি দিয়ে ঘুমালাম। প্রথম রাতে অমিতা বেশ কিছু শুকনো খাবার আর পাস্তা দিয়ে গেলো। অমিতার মেয়েটার প্রতি কৃতজ্ঞতার কোন শেষ নেই।


পরদিন সকালবেলা সোজা চলে গেলাম ল‍্যাবে। জন র‍্যাডক্লিফ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় তখন ল‍্যাব মিটিং চলছিলো। আমি সোজা রুমে ঢুকলাম। আমার বস সাজিয়া, বন্ধু অানামারিয়া আমাকে দেখে মিটিং বন্ধ করে গল্প শুরু করলো। তারপর আমিও যোগ দিলাম মিটিং-এ। এভাবেই কাটলো আমার প্রথম দিন।


২৬ সেপ্টেম্বর সকালে আমি ব‍্যালিয়ল কলেজে মুভ করলাম। অমিতা অসম্ভব ধৈর্য নিয়ে আমার মালপত্র নতুন বাসায় উঠিয়ে দিয়ে আসলো। বিছানার কভার থেকে শুরু করে রান্নার লবণ পর্যন্ত বাজার করে দিলো। বেশ এক সপ্তাহের মধ‍্যেই অক্সফোর্ডে সেটেল হয়ে গেলাম। তারপর শুরু হলো ল‍্যাব জীবন। সেই জীবন এখনো চলছো। দুই এক্সপেরিমেন্টের মাঝের ৪০ মিনিটের গ‍্যাপ পেয়ে স্মৃতি রোমন্থনে লেগে গেলাম। 


গত এক বছরে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়েছে। আমার ওজন কেজি কমেছে। মাথার বুদ্ধি অর্ধেক হেয়ে গেছে। অমিতা বাংলাদেশে চলে গেছে। আমার ল‍্যাবের তিন সদস‍্য পাশ করে গেছে। আমি ব‍্যালিয়ল কলেজে থেকে এখন নিজের বাসায় চলে গেছি। একটা জিনিসই পরিবর্তিত হয়নি। তা হলো ব‍্যস্ততা। কাজ বাড়ছে। হাজার বছরের পুরোনো সেই কাজ। সত‍্যকে জানার সন্ধান!



Contact

Hi there! Please leave a message and I will try my best to reply.

© 2024 Shamir Montazid. All rights reserved.
Made with love Battery Low Interactive.