জন্মদিন ২০১৯
May 27, 2020 | 3047
২৪ মে, জন্মদিন। অবশ্যই আমি কিছুটা হলেও তা নিয়ে রোমাঞ্চিত ছিলাম। বছরের এই একটা দিন অন্তত নিজের বলে মনে হয়। দেশের বাইরে এটা আমার প্রথম জন্মদিন। তাই, নতুন বন্ধু-বান্ধবদের সাথে করে দিনটা সেলিব্রেট করবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম।
আমার বস ২৩ তারিখ বিকেল বেলা একটা কেক নিয়ে এসে সারপ্রাইজ দিয়ে বসলো। কারণ, বাংলাদেশের সময় অনুসারে তখন ২৪ মে হয়ে গেছে। ল্যাবের সবাই মিলে কেক কাটলাম। ডিপার্টমের্টের হেডও কি মনে করে যেন এসে আমাদের সাথে যোগ দিলো। ব্যাপারটা বেশ অসাধারণ লাগলো।
২৪ তারিখ সকাল ৭-টায় ল্যাবে ঢুকলাম। গতদিনের এক্সপেরিমেন্টটা বেলা ১২ টার আগে শেষ করতে চাইছিলাম। একটু দেরী হয়ে গেলো। ১২.৩০ মিনিটে অ্যানামারিয়া আর জেস এসে হাজির। এরা দুজনেই আমার সহকর্মী। আমাকে ল্যাব থেকে রীতিমতো টেনে বের করে নিয়ে গেলো। উদ্দেশ্য লাঞ্চ করা।
আমি ভাবলাম ১ ঘন্টার মাঝে ফিরে আসবো। তিনজনে মিলে গ্রীক দোকানে খেতে গেলাম। একসময় জেস বিদায় নিলো। ইটালিয়ান অ্যানামারিয়া আমাকে ফুসলিয়ে সুন্দরমতো একটা কফির দোকানে ঢুকালো। বাকিটা সবাই জানে। আমি গল্পের আসর জুড়ে দিলাম। বেলা ৫-টা বেজে গেলো। হুশ ফিরতেই ল্যাবে ফেরত গেলাম।
প্রতি শুক্রবার আমাকে একটা সাপ্তাহিক রিপোর্ট জমা দিতে হয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেটা লিখে ৭.০০-টা নাগাদ সাইকেলে চড়ে বাসার দিকে ফেরত আসলাম। ব্যাগটা রেখে, জুতোটা বদলিয়ে দৌড় দিলাম জাপানিজ রামেনের দোকান “শরিউ”তে। ঢুকতেই দেখি পুরো গ্যাং দলেবলে হাজির। ইফতি, ম্যাক, মনজি, মোহ, আভিষেক, ভিক, জিসুং বিশাল একটা টেবিল দখল করে বসে আছে। রামেন অর্ডার করা হলো। আমি বসে একের পর এক গিফট খুলতে থাকলাম। সবাই কেন জানি আমাকে অনেক জ্ঞানী মনে করে। এক অ্যানামারিয়া ছাড়া সবাই বেশ নামকরা কোন একটা বই গিফট হিসেবে নিয়ে এসেছে।
ডিনার শেষ করে ফেরত আসলাম “আমার” ব্যালিয়ল কলেজে। সেখানে চললো দ্বিতীয় প্রস্থ আড্ডা। সেই আড্ডা শেষ হলো রাত তিনটায়। পরদিন সকালে উঠে সবাই গেলাম ইফতির গ্রাম উল্ফসন কলেজে। সেখানে হলো জমপেশ ব্রাঞ্চ। গত ছয় মাসে যে চার কেজি ওজন কমিয়েছিলাম সেটা এক সপ্তাহেই আবার ফেতর নিয়ে আসলাম। কি আর করার?
ফেইসবুকে অনেকেই অসম্ভব সুন্দর পোস্ট করে অভিনন্দন জানিয়েছে। সবার জন্য রইলো অন্তর কচলানো ভালোবাসা। জীবনটা অনেক সুন্দর। প্রতি ৩৬৫ দিনে জীবনটা এক বছর করে পেছনের দিকে যাচ্ছে। গত বছরেও কিশোরসুলভ আচরণ করতাম। এখন পুরোপুরি বাচ্চা হয়ে গেছি।
Getting old is inevitable. Growing up is optional.