যুদ্ধাস্ত্র থেকে মাইক্রোওভেন
May 4, 2017 | 9617
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
সময় অসংখ্য প্রাণের বিলোপ
হলেও বিজ্ঞানের
উন্নতি সাধিত
হয়েছিলো অনেকখানি।
মিত্রপক্ষ ও
শত্রুপক্ষের পারস্পারিক
প্রতিযোগিতায় সেসময়
আবিষ্কারের মুখ
দেখে বেশ
কিছু যুগান্তকারী
ডিভাইস। মাইক্রোওভেন
তাদের মধ্যে অন্যতম।
অত্যন্ত
কাজের এই
যন্ত্রটি আবিষ্কারের
ইতিহাসটা একটু
মজার। অনেকটা
দূর্ঘটনা থেকেই
আবিষ্কার ঘটেছিলো
মাইক্রোওভেনের।
ড. পার্সি স্পেন্সার ছোটবেলা থেকেই খুব কৌতুহলী ছিলেন। মাত্র আঠারো বছর বয়সে তিনি আমেরিকান নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। সেসময় জাহাজের যোগাযোগ ব্যবস্থায় রাডার ব্যবহারে ড. পার্সি বেশ দক্ষ হয়ে উঠেন। 1939 সাল নাগাদ তিনি হয়ে গেলেন রাডার সংক্রান্ত ব্যাপারে বিশ্বের অন্যতম এক্সপার্ট। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার অপেক্ষায় ছিলোমাত্র। ড. পার্সি সেসময় কাজ করতে শুরু করেন ‘রেইথিওন’ নামের এক কোম্পানিতে। ভাগ্যক্রমে এই কোম্পানিটি ছিলো আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের অন্যতম পার্টনার। তারা রাডার ব্যবহার করে শত্রুপক্ষের অবস্থান নির্ণয় করার জন্য গবেষণা শুরু করে। বিশ্ববিখ্যাত ম্যানহাটন প্রজেক্টের পর এই রাডার প্রজেক্ট ছিলো আমেরিকার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মিলিটারী গবেষনা।
ডা. স্পেন্সারের সেই কোম্পানিতে কাজ করতেন ক্ষুদ্রতরঙ্গ উৎপাদনকারী রাডার নিয়ে যা ব্যবহার করে দূরের কোন বস্তুর অবস্থান বোঝা যাবে। 1945 সালের দিকে তিনি নিজের কোম্পানীর ল্যাবে কাজ করছিলেন। হঠাৎ, অসাবধানতা বশত: বেশ কয়েকবার তিনি হেঁটে চলে যান কতগুলো রাডারের তরঙ্গের সামনে দিয়ে। প্রচন্ড ব্যস্ততাপূর্ণ দিনে ড. পার্সি এই একই ভুল করতে থাকেন বার বার। বেলা বাড়তে থাকার সাথে সাথে তার zকিছুটা খিদে জাগে। পকেটে রাখা চকলেট বারের দিকে হাত বাড়াতেই তার একেবারে আক্কেল গুড়ুম অবস্থা! তিনি অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করলেন, চকলেট বারটি একে বারে গলে তরল হয়ে আছে!
সাধারণ মানুষ হলে হয়তো ব্যাপারটিকে নিয়ে কেউ এতো মাথা ঘামাতো না। কিন্তু, ড. স্পেন্সার ছিলেন অসাধারণ এক পর্যবেক্ষণ শক্তির অধিকারী। তিনি তার চকলেট গলে যাওয়ার রহস্য উৎঘাটনে লেগে গেলেন! ধারণা করলেন, হয়তো রেডিও তরঙ্গের এতে কোন ভূমিকা আছে। সেটা প্রমাণ করতে তিনি এক বস্তা ভুট্টার মধ্য দিয়ে চালিয়ে দিলেন সেই রাডারের তরঙ্গ। ফট ফট শব্দ করে তৈরি হতে লাগলো পপকর্ণ! তার পরের ঘটনাটা পুরোটাই ইতিহাস।
যুদ্ধের পর রেইথিওন কোম্পানি 1946 সালে মাইক্রোওয়েভ ওভেনের পেটেন্ট করে ফেললো। শত্রু
মারার যন্ত্র
আবিষ্কার করতে
গিয়ে তারা
আবিষ্কার করে
ফেললো সুস্বাদু
খাবার রান্নার
মেশিন। প্রথম
দিককার মাইক্রোওভেন
ছিলো প্রায়
ফ্রিজের সমান
বড়; দামও
ছিলো অনেক।
আর এখনকার
দিনের মাইক্রোওভেন
তো ছোট্ট
একটা বাক্সের
সমান। তাতে
রান্না হয়
কেক-পেস্ট্রি-পুডিং সহ আরো
কতো মজার
খাবার। সবই
কিন্তু, 1945 সালে ড. স্পেন্সারের
সেই ভুল
করে রাডারের
সামনে দিয়ে
হেঁটে চলে
যাওয়ার ফসল!
You can
see with your eyes. But, you need your imagination to observe.