বিজ্ঞান কীভাবে কাজ করে
Nov 6, 2017 | 14166
মাস্টার্স পাশ করার পর এক বাল্যবন্ধুর সাথে দেখা। আমি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র হওয়ায় স্বভাবতই সবাই আমার গবেষণা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে। আমার বন্ধুও আমার থিসিস সম্পর্কে জানতে চাইলো। আমি বললাম, “মানুষের চারটি মিউটেশন সনাক্ত করার জন্য আমি একটি DNA-based Diagnostic
Test তৈরি করেছি।”
আমার বন্ধুর পরবর্তী প্রশ্ন:
“দোস্ত, কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলে তোর আবিষ্কার করা এই টেস্ট করা যাবে?”
প্রশ্ন শুনেই আমি বেশ অবাক হয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর অনুভব করলাম আমরা সবাই সায়েন্সকে অনেক সহজ মনে করি। সবার ধারণা, গবেষকরা ল্যাবে বসে সারাদিন টেস্টটিউব নাড়া-চাড়া করেন। দিনশেষে তারা “ইউরেকা” বলে চিৎকার দেন। পরের দিনই সেই আবিষ্কার আমাদের হাতে চলে আসে। সায়েন্টিস্টদের প্রতি তাই আমাদের অসম্ভব সম্মান ও বিশ্বাস। তাদের মুখের কথাই আসল সত্য!
ফেইসবুকে I am a scientist, Daily
Dose of Science, Science Today ইত্যাদি নামের কিছু পেইজে প্রায়ই এই জাতীয় কিছু পোস্ট দেখা যায়: “A new study found
that kissing is good for health.” “A new study found that eating eggs can cause
cancer.”
একদল বিজ্ঞানী প্রায় ২-৩ বছর গবেষণা করে যে তথ্য আবিষ্কার করলেন সেইটা এই ক্লিক বেইট সাইটগুলো মাত্র একলাইনে মানুষকে বুঝিয়ে দিলো?
এককালে আমাদের দেশে মানুষজন সায়েন্সে পড়তে আগ্রহী ছিলো না। তাই, ছোটবেলা থেকে আমাদেরকে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে, “Sciece is Fun.” সায়েন্স অবশ্যই মজাদার; কিন্তু, যে বিজ্ঞান বুঝে তার জন্য। তবে, সায়েন্স কোনদিনই সহজ কিছু না। এই পোস্টটি লেখার পেছনে আমার মূল উদ্দেশ্য হলো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সামনে বিজ্ঞান কীভাবে কাজ করে সেটা তুলে ধরা। যারা জীবনে বিজ্ঞানী হবার স্বপ্নে বিভোর তাদের সামনে বাস্তব চিত্রটা একটু একে দেখানো দরকার।
ধরুন, আপনি একজন বিজ্ঞানী। আপনি জানতে চান যে, ধূমপান ও হৃদরোগের মাঝে কোন সম্পর্ক আছে কিনা। প্রথমেই আপনার যা করতে হবে সেটা হলো টাকা জোগাড় করা। রিসার্চ করতে অনেক টাকা লাগে। বিভিন্ন সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি সরকার এই টাকা দিয়ে থাকে। নিজের গবেষণার বিষয়টির গুরুত্ব সুন্দর করে উপস্থাপন করে একজন বিজ্ঞানী প্রথমে তার ফান্ড জোগাড় করেন। আমাদের দেশে এই ফান্ড খুবই কম হওয়ায় দেশী বিজ্ঞানীদের মেধা থাকলেও অর্থাভাবে অনেক ভালো কিছু করতে পারেন না।
ধরা গেলো আপনি ফান্ড পেয়ে গেলেন। অভিনন্দন। এবার আপনার গবেষণা শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় ক্যামিকেল, যন্ত্রপাতি কিনবেন। সুন্দর করে আপনার কাজগুলো ধাপে ধাপে সাজিয়ে নিবেন। একজন বিজ্ঞানী একদিন ল্যাবে কাজ করার আগে একমাস ধরে তার প্রস্তুতি নেন। সেই একদিনের কাজের ফলাফল নিয়ে পরবর্তী এক বছর ধরে বিশ্লেষণ করেন।
একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিশুদ্ধতার বেশ কিছু মাপদন্ড আছে। প্রথম জিনিস হলো তার স্টাডি ডিজাইন। গবেষণার একটি টেস্ট গ্রুপ এবং একটি কন্ট্রোল গ্রুপ থাকবে। ধরুন, আপনি একদল মানুষ নিলেন যারা ধূমপান করে। তারা আপনার টেস্ট গ্রুপ। আবার, ধূমপান করে না এমন একদলকে নিতে হবে যাকে কন্ট্রোল গ্রুপ বলে। এরপর আপনি পরীক্ষা করে দেখলেন যে, ধূমপায়ীদের হৃদরোগ হচ্ছে। কিন্তু, অধূমপায়ীদের সেই রোগগুলো হচ্ছে না। তাহলে, বলা যাবে, ধূমপান হয়তো হৃদরোগের জন্য দায়ী। কোন কারণে যদি আপনার কন্ট্রোল গ্রুপেও হৃদরোগ পাওয়া যায় তাহলে কিন্তু আপনি হৃদরোগের জন্য শুধু ধূমপানকে দায়ী করতে পারবেন না। তাই, টেস্ট এবং কন্ট্রোল নির্বাচন করতে সায়েন্টিস্টদের গলদঘর্ম হতে হয়।
দ্বিতীয় জিনিস হলো স্যাম্পল সাইজ। আপনি টেস্ট ও কন্ট্রোল গ্রুপে কতজন মানুষ নিয়ে যাচাই-বাছাই করেছেন? কেউ টাকার অভাবে ২০ জন নিয়ে কাজ করে। আবার, অক্সফোর্ডের স্যার ওয়াল্টার বডমার নামের এক ভদ্রলোক (যিনি তার গবেষণার জন্য Knight উপাধি পেয়েছেন) ২৯ হাজার ব্রিটিশ পপুলেশনের উপরও কাজ করেছেন। অবশ্যই, যত বড় স্যাম্পলের উপর কাজ করা হবে তত নির্ভরশীল রেজাল্ট পাওয়া যাবে। মাত্র ১০০-২০০ মানুষের উপর ট্রায়াল দিয়ে পাওয়া তথ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্ভরযোগ্য হয় না।
তৃতীয় জিনিস হলো Conflict of Interest. ধরুন, আপনি গবেষণা করে প্রমাণ করলেন যে, ধূমপান সরাসরি হৃদরোগের কারণ নয়। কিন্তু, আপনার এই গবেষণার ফান্ড দিয়েছে British American Tobacco
কোম্পানি যারা গোল্ড লিফ সিগারেট বিক্রি করে। সুতরাং, মানুষ তখন আপনার এই গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে চাবে না। কারণ, টাকার বিনিময়ে অনেকেই গবেষণা করে কোন একটি কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দিতে চায়।
চতুর্থ জিনিস হলো Statistics. আপনি যে বিষয়েরই গবেষক হোন না কেন, আপনাকে পরিসংখ্যান অবশ্যই শিখতে হবে। আপনার প্রাপ্ত রেজাল্টকে বিভিন্ন Statistical Test করে তার নির্ভরতা প্রমাণ করতে হবে। এই সকল পরীক্ষা বলে দেয় আপনার পাওয়া তথ্যতে ভুল থাকার সম্ভবনা কতটুকু। তাই, যেকোন বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে এখন অন্তত একজন পরিসংখ্যানবিদ রাখতেই হয়।.
মানুষ নিয়ে গবেষণা করা অনেক ক্ষেত্রেই অনৈতিক। তাই, মানুষে কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যধারী ইঁদুর, বানরের উপরই অধিকাংশ গবেষণা করা হয়। সেই ফলাফল নিয়ে মানুষের কোষের উপর গবেষণা করা হয়। তারপর, জীবন্ত মানুষের উপর কাজ করতে হয়। অধিকাংশ চোখ ধাঁধানো আবিষ্কার ইদুঁরের উপর গবেষণার ফল। সেটা মানুষে কাজ করার সম্ভাবনা আছে; তবে তা খুবই অল্প। ফেইসবুক পেইজে বিজ্ঞান বিক্রেতারা সেই তথ্য গুলো সবসময়ই চেপে যান।
এরকম আরো হাজারো জিনিস বিবেচনা করতে হয়। নানা রকম পক্ষপাতদুষ্টতা (বায়াস) পরিহার করে গবেষণা করতে হয়। এরকম একটি গবেষণা হলো Double Blind Study. নতুন ওষুধ আবিষ্কারের পর তার ড্রাগ ট্রায়াল দিতে এই স্টাডি বেশ জনপ্রিয়। এর সারমর্ম হচ্ছে:
একদল সুস্থ মানুষ এবং একদল রোগাক্রান্ত মানুষ নেয়া হবে। যে ওষুধটি ট্রায়াল দেয়া হবে ঠিক তার মত দেখতে আরো একটি ট্যাবলেট বানাতে হবে যার মধ্যে শুধু চিনির গুড়া আছে। এই ফেইক ওষুধের নাম হলো Placebo. অনেক সময় “ওষুধ খাচ্ছি” এই মানসিক চিন্তাই মানুষের রোগ ভালো করে দিতে পারে। এর পেছনে ওষুধের নিজের কোন ভূমিকা নেই। মানসিক বলে রোগমুক্তির এই ঘটনাকে তাই বলে Placebo Effect.
এখন একজন গবেষক একধরণের ওষুধের উপর A, অন্যটির উপর B লিখে ডাক্তারের কাছে দিয়ে যাবেন। ডাক্তার কখনোই জানতে পারবে না যে কোনটি আসল ওষুধ। অর্থাৎ, পুরো প্রক্রিয়াতে ডাক্তার ওষুধের পরিচয় সম্পর্কে ব্লাইন্ড। এখন ডাক্তার দৈবচয়নে রোগী এবং সুস্থ ব্যক্তিদের এই দুই ধরণের ওষুধ থেকে যেকোন একটি ট্যাবলেট দিবেন। এই মানুষগুলোও কখনো জানতে পারবে না যে, তারা আসল ওষুধ পেয়েছে নাকি Placebo. সুতরাং, তারাও ওষুধের পরিচয় সম্পর্কে ব্লাইন্ড। তাই, এই গবেষণাকে বলা হয় Double Blind Study.
আপনার মনে হতে পারে, এতো ঝামেলার কি দরকার?
দরকার অবশ্যই আছে। একজন ডাক্তারের কোন রোগীর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে উনি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে সেই রোগীকে placebo এর বদলে আসল ওষুধ দিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ, পুরো প্রক্রিয়াটি তখন আর random থাকলো না। এই রকম পক্ষপাতদুষ্টতা আমাদের সবার মাঝেই থাকে। একজন বিজ্ঞানীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, নিজের মানসিক বায়াস থেকে বের হয়ে এসে নির্দলীয়ভাবে গবেষণা করা।
এতকিছু বিবেচনা করে গবেষণা করতে ২-৩ বছর সময় লেগে যায়। ধরুন, আপনার গবেষণার ফলাফল হাতে আছে। এখন কি করবেন?
বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিশাল প্রতিযোগিতা কাজ করে। তাই, নিজের আবিষ্কারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু, প্রকাশ কই করবো? পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিবো?
হ্যাঁ। পত্রিকায় প্রকাশ করবেন। তবে বৈজ্ঞানিক পত্রিকা বা সায়েন্টিফিক জার্নালে। সারাবিশ্বে হাজার হাজার জার্নাল আছে। কিছু ভালো; তবে অধিকাংশই ব্যবসার উদ্দেশ্যে কাজ করে। একটি জার্নাল কতটুকু ভালো তা বোঝা যায় তার impact factor দ্বারা। বিশ্বের সেরা জার্নাল New England Journal of
Medicine এর impact factor ৫৯. নেচার বায়োটেকনলজির স্কোর ৪৪.৫. নেচারকে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক জার্নালগুলোর একটি বিবেচনা করা হয়।
তবে অধিকাংশ বিজ্ঞানীর গবেষণা প্রকাশিত হয় মাত্র ১-৩ impact factor বিশিষ্ট জার্নালে। তাই, কারো গবেষণার গভীরতা যাচাই করতে তার জার্নালের এই স্কোর জিজ্ঞাসা করুন। একজন বিজ্ঞানীর সারা জীবনের স্বপ্ন থাকে Nature এ গবেষণা প্রকাশ করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার জানামতে হাতেগোনা কয়েকজন আছেন যারা এই সম্মান অর্জন করেছেন।
আপনার গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত হলো। অন্য কথায়, বিজ্ঞানের জগতে আপনি আপনার পায়ের ছাপ রেখে ফেলেছেন। এখন কি?
আসল লড়াই শুরু হবে গবেষণা প্রকাশিত হবার পর। বিশ্বের শত শত বিজ্ঞানী আপনার কাজ পড়ে দেখবেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য আপনার কাজের ভুল ধরা। এ কি ধরনের আচরন? তাই না? পাড়া-বেড়ানী আন্টির মতো বিজ্ঞানীরা কেন মানুষের কাজের ভুল ধরেন?
আসলে এই প্রক্রিয়াটাই বিজ্ঞানকে বিশুদ্ধ রেখেছে। একটি গবেষণায় কোন ভুল, বায়াস থাকলে সেটা অন্য বিজ্ঞানী প্রমাণ করে দেখান। অনেক সময় গবেষক নিজেই নিজের লেখায় এই সকল সীমাবদ্ধতাকে স্বীকার করেন। ভালো একটি গবেষণা হাজারো বিজ্ঞানীর রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। তারা রাত জেগে চিন্তা করেন এই কাজের জের ধরে নতুন কি করা যায়? পরদিন সকালে ল্যাবে যেয়ে তারা নতুন কিছুর পেছনে লেগে পড়েন। এইভাবে একটা আবিষ্কার তার পরবর্তী আবিষ্কারের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগে সেটা হলো, একজন আপনার মাসের পর মাস খেটে করা কাজের ভুল ধরিয়ে দিচ্ছে। আপনি কই রাগ করবেন? কিন্তু, বিজ্ঞানীরা বরং এই ক্রিটিকদের অসম্ভব পছন্দ করেন।
এই প্রবন্ধের শুরুতে একটা লাইন লিখেছিলাম। এখন সেটা ভেঙ্গে বলি। “New study found that
eating eggs can cause cancer” এই জাতীয় শিরোনাম কোন বৈজ্ঞানিক জার্নালে থাকে না। এই গুলো ক্লিক বেইট সাইটের শিরোনাম যারা অধিকাংশ সময়ই ভুল/অসম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে। হয়তো আসল গবেষণা প্রবন্ধটি পড়লে বোঝা যাবে এই গবেষণা আসলে ২০টি ইদুঁরের উপর করা। সেই কাজেরও হয়তো ১০টা ভুল আছে। অর্থাৎ, একটা গবেষণা কখনোই পারফেক্ট হয় না।
তাহলে, আমরা কীভাবে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাবো?
একটি নতুন আবিষ্কার জার্নালে প্রকাশ হবার পর সারা বিশ্বের সবাই সেটা নিয়ে কাজ করে নিজেদের ফলাফল প্রকাশ করেন। প্রায় ৫-১০ বছর কাজ হওয়ার পর কেউ একজন রাতের ঘুম হারাম করে সেই সকল কাজের একটা সারমর্ম প্রকাশ করেন । এই ধরনের লেখাকে বলে review paper. এগুলো পড়লে একটি টপিকের উপর করা শত শত বিজ্ঞানীর কাজের একটা সুন্দর সারসংক্ষেপ পাওয়া যায়। এই তথ্যগুলোই মূলত বেশি নির্ভরযোগ্য। একটিমাত্র গবেষণার ফলাফল ততটা নির্ভরযোগ্য নয়।
গল্পের শুরুতে আমি নিজের মাস্টার্স থিসিসের কথা বলে শুরু করেছিলাম। সেই ডায়াগনস্টিক টেস্টের মেথডটি আমরা আগে প্রকাশ করবো। তারপর অন্যান্য বিজ্ঞানীরা তাদের মতামত দিবেন। সবার ফলাফল কাছাকাছি মিলে গেলে বোঝা যাবে যে, আমাদের গবেষণা ঠিক আছে। শুধু মাত্র আমাদের ল্যাবের কাজের ফলাফল দিয়ে ডায়াগনস্টিক টেস্ট বানিয়ে সেটা হাসপাতালে বিক্রি করা অনৈতিক হবে। অধিকাংশ টেস্ট এবং ওষুধ প্রায় ২০ বছরের গবেষণা ও ট্রায়ালের পর মানুষের সেবার পৌছাঁয়।
সুতরাং কি বুঝলেন?
Science is a very slow and rigorous process. বিজ্ঞানীদের দিন-রাত বলে কিছু থাকে না। এখানে কোন কিছুই সিম্পল না। বিজ্ঞানীদের খুব বেশী টাকা পয়সাও থাকে না। অধিকাংশ বিজ্ঞানীই তার জীবনদশায় নিজের কাছের বাস্তব প্রয়োগ দেখে যেতে পারেন না।
তাহলে, তারপরও কেন মানুষ বিজ্ঞানী হতে চায়?
কারণ, টাকাই সব কিছু না। অনেকের কাছেই টাকা অপেক্ষা মেধার চর্চাটা বড়। এবং বিজ্ঞানীদের এই চর্চাটা নি:সন্দেহে অনেক বেশী। এই পেশাটা সবচেয়ে বেশী চ্যালেঞ্জিং। এবং এই পেশার অধিকাংশ মানুষ অসম্ভব রকমের বদরাগী কিন্তু সৎ হয়। আমি মন থেকে বিজ্ঞানীদের অসম্ভব সম্মান করি। কারণ, তাদের নি:স্বার্থ ত্যাগ ছাড়া আমরা আজকের সভ্যতাটা দাড়াঁ করাতে পারতাম না।
এই লেখাটা লিখার মূল উদ্দেশ্য ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানীদেরকে বাস্তবতার স্বাদ দেয়া। অনেকেই হয়তো ভাববেন যে, আমি হয়তো মানুষকে ভয় দেখাচ্ছি। কথা সত্যি! আমি কিছুটা ভয় অবশ্যই দেখাচ্ছি। কারণ, ফেইসবুকের নিউজফিডে বিজ্ঞানকে যতটা সহজ আর মজার মনে হয় ল্যাবের ভিতরে বিজ্ঞান বেশ জটিল। কিন্তু, আমি জানি, তারপরও আমার মতো একদল বোকার হদ্দ পাওয়া যাবে যারা বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। তাদের জন্য বলছি:
তুমি বিজ্ঞানী হতে চাইলে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তোমার দিন-রাত অফিস-টাইম বলে কিছু থাকবে না। খুব বেশি টাকাও পকেটে হয়তো জুটবে না। তোমার BBA পড়া বন্ধুরা হয়তো তোমার তিনগুন বেতন পাবে। কিন্তু, একটা অর্জন তোমার ঠিকই থাকবে। হয়তো, ২০০-৩০০ বছর পরও বইয়ের পাতায় তোমার নামটা সবাই পড়বে।
Take
that immortality as your payment. We still remember the works of Newton, Da
Vinci, Tesla, Curie and Einstein. They are all dead yet so alive and
influential in our lives.
Aren’t they?