ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়ের ক-ইউনিট: সাবজেক্ট চয়েস
Education

ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়ের ক-ইউনিট: সাবজেক্ট চয়েস

Oct 22, 2017   |    34512


প্রথমেই যারা এবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পেয়েছো তাদের আগাম শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানিয়ে রাখছি। তোমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী ভাগ্যবান শিক্ষার্থীদের অংশ হয়ে গেছো তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু, চান্স পাওয়ার পর কোন সাবজেক্ট পড়বে সে সিদ্ধান্ত নিতে তোমাদের নানা ভাবে বিপর্যস্ত হতে হচ্ছে। পরিবার, প্রিয়জনের কথা মানতে গেলে নিজের ড্রিম সাবজেক্ট ছেড়ে দিতে হবে সমস্যা চান্সপ্রাপ্ত প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীরই। এই পোস্টটিতে আমি নিজ অভিজ্ঞতা থেকে সাবজেক্ট চয়েস সংক্রান্ত কিছু বিষয় তুলে ধরছি। আমি কথা পরিষ্কার করে বলে নিতে চাই:

 

·        বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্স্ট বা লাস্ট বলে কোন সাবজেক্ট নেই। সকল সাবজেক্ট আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।

·        এই পোস্টটি কেবলমাত্র একটি তথ্যসমৃদ্ধ নির্দেশক। সাবজেক্ট চয়েস করার দায়িত্ব তোমার কেবলই নিজের।

 

সাবজেস্ট চয়েসের সময় কি কি বিষয় ভাবতে হবে?

 

. নিজের প্যাশন কি?

 

তার মানে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যসূচির কোন বিষয় গুলো তোমার কাছে আকর্ষণী মনে হয়, এবং কোন বিষয় গুলো তোমার কাছে সহজবোধ্য মনে হয়। এই প্রশ্নের উত্তর একটি বা দুটি সাবজেক্ট যেমন- ফিজিক্স+ ম্যাথ, বায়োলজি+ কেমিস্ট্রি, শুধু বায়োলজি, ম্যাথ হতে পারে।

 

. ভবিষ্যতে তুমি সমাজে কি ধরণের ভূমিকা পালন করতে চাও?

চাকরি: অধিকাংশের জন্যই পড়াশোনা শেষে চাকরিতে যোগদান, অর্থ উপার্জন, দ্রুত সংসার শুরু করা জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য।

 

করণীয়: এটা তোমার উদ্দেশ্য হলে সাবজেক্ট চয়েসের সময় অবশ্যই দেশের চাকরির বাজারের কথা চিন্তা করতে হবে। কেউ বিদেশে গিয়ে চাকরি করতে ইচ্ছুক হলে তার জন্য যে কোন সাবজেক্টই সমান সুযোগ উন্মোচন করতে পারবে। চাকরির বাজারে ফলিত অর্থাত অ্যাপ্লাইড বিষয়ের দাম বেশী।

 

গবেষণা: অতি সামান্য সংখ্যক শিক্ষার্থীরই গবেষণার প্রতি আগ্রহ থাকে। এদের পড়াশোনা করতে, জ্ঞান অর্জন বিতরণ করতে ভালো লাগে। এদের অর্থ-বিত্ত, সংসার, চাকরির মোহ কম। নিজের সাবজেক্টের প্রতি স্বীয় অবদান রাখাটাই এদের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য। এরা ভবিষ্যতে বইয়ের পাতায় আবিষ্কারক হিসেবে নিজের নাম দেখতে চায়।

 

করণীয়: তোমাদের জন্য সাবজেক্ট চয়েস একটি এসিড টেস্ট। একটি ভূল সিদ্ধান্ত অনেক বড় হুমকির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। নিজের প্যাশন ব্যতীত অন্য কোন ফিল্ডে গবেষণা করে সফল হওয়ার সম্ভাবনা খু্বই কম। তোমরা দয়া করে চাকরির বাজার কিংবা পরিবারের ইচ্ছা অপেক্ষা আধুনিক বিজ্ঞানের নবীনতম বিষয়গুলোর প্রতি নজর দাও। মনে রেখো, তোমার সিজিপিএ খারাপ হলেও ভালো গবেষক হতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজন অধ্যবসায় এবং প্রত্যয়।

 

শিক্ষকতা: বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শেষে ১ম/২য়/৩য় অর্থাৎ প্রথমদিকের স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীরা প্রভাষক হতে পারে। তাই শিক্ষাকতাকে ভবিষ্যতে পেশা হিসেবে নিতে চাইলে অবশ্যই ক্লাসের প্রথম সারির স্টুডেন্ট হবার চেষ্টা করতে হবে।

 

করণীয়: ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হলেই যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হতে পারবে এমন কিন্তু নয়। তাই, যে কোন সাবজেক্টে ভর্তি হওয়া যে কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো করে টিচার হতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজন প্রথম বর্ষের প্রথম পরীক্ষা থেকেই দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে পড়াশোনা করা। তোমাদের জন্য গায়ে বাতাস লাগিয়ে প্রেম করার সময় খুব বেশী নেই; অল্প একটু আছে।

 

একটু অনুরোধ রইলো: শুধুমাত্র চাকরির নিমিত্তে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করো না। ক্লাসে পড়ানোটা একটা আর্ট যেটা না থাকলে তোমার ক্লাসে স্টুডেন্ট বসে মোবাইলে ফেইসবুক চালাবে।

 

কোন ধরণের ভূমিকাটি সবচেয়ে ভালো?

 

সবগুলোই সমান পরিমাণে মহৎ এবং ভালো। তুমি যে কোনটির দিকে গেলেই দেশের প্রতি অবদার রাখতে পারবে।

 

. পরিবারের সদস্যদের কি ইচ্ছা?

বাংলাদেশের অধিকাংশ বাবা-মা চান ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-চাকুরিজীবী সন্তান। তোমাদের পছন্দের সাথে তাদের পছন্দের মিল নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের সাথে রাগারাগি না করে নিজের প্যাশন উদ্দেশ্যের কথা বুঝাতে হবে। মনে রাখবে, তোমরা পিতা-মাতা তোমার জন্য একটি সহজ কন্টকহীন জীবন চান। তারা চায় না তাদের সন্তান কষ্ট করুক। তাই, তাদের সাথে খোলামেলা কথা বলে নাও। তাদের মনে কষ্ট দিও না। যদি এরপরও বাবা মা তোমার প্যাশনের কথা বুঝতে না পারে সেক্ষেত্রে নিজের প্যাশনের দিকে যাও। তোমার ভবিষ্যত সাফল্য দেখে বাবা মা নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন। (লেখকের জীবনে এই ঘটনাটি নাটকীয়ভাবে ঘটেছে)

 

. তোমার প্যাশনের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিষয়গুলোর সম্পৃক্ততা আছে?

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিষয়েরই নিজস্ব একটি বেস ফিল্ড আছে। তারপরও সকল বিভাগই বিভাগবর্হিভূত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অর্ন্তভূক্ত রাখে। কয়েকটি বিভাগের জন্য প্যাশন বুঝতে একটি তালিকা দেয়া হলো:

জিনপ্রকৌশল জীব প্রযুক্তি: জীববিজ্ঞান (কোষ, কোষস্থ জৈব রসায়ন, বায়োটেকনলজি, উদ্ভিদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া)+ রসায়ন (মূলত জৈব রসায়ন)

ফার্মেসী: রসায়ন (জৈব এবং অজৈব)+ জীববিজ্ঞান

বায়োকেমিস্ট্রি: জিনপ্রকৌশলের অনুরূপ

মাইক্রোবায়োলজি: মূলত জীববিজ্ঞান (ব্যাকটেরিয়া+ভাইরাস+ছত্রাক+শৈবাল) রসায়ন

বোটানি, জুলজি, ফিশারি: জীববিজ্ঞান (রুইমাছ, ঘাসফড়িং, ফুল, বিবর্তন)

মৃত্তিকা, পানি, পরিবেশ বিদ্যা: জীববিজ্ঞান(ইকোলজি+ জীববৈচিত্র্য)

ভূগোল, ভূতত্ত্ব, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা: ইকোলজি+ ভূগোল

ফিজিক্স/ অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স/নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং: ফিজিক্স+ম্যাথ

কেমিস্ট্রি/ অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি: কেমিস্ট্রি(সকল ধরণের) + ম্যাথ

কম্পিউটার সায়েন্স/আইটি: প্রোগ্রামিং+ ম্যাথ

ম্যাথ/পরিসংখ্যান: ম্যাথ

এবিষয়ে আরো জানতে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অধ্যয়নরত ভাইয়া-আপুদের সাথে যোগাযোগ করলে আরো বিস্তারিত জানতে পারবে।  

 

চয়েস ফরম কীভাবে পূরণ করবো?

 

. তালিকা তৈরি: উপরোক্ত আলোচ্য পয়েন্টগুলোর উপর ভিত্তি করে একটি তালিকা তৈরি কর। একটি বিবেচনাহীন তালিকা নিম্নে দেয়া হলো:

 

প্রথম চয়েস: জিনপ্রকৌশল (কারণ, তথা কথিত র্ফাস্ট সাবজেক্ট)

দ্বিতীয় চয়েস: সিএসসি (কারণ, বুয়েটের পর ঢাকার মধ্যে ঢাবির সিএসসিকেই ভালো ধরা হয়)

তৃতীয় চয়েস: নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং (কারণ, নতুন সাবজেক্ট)

চতুর্থ চয়েস: ফার্মেসী (কারণ, চাকরির বাজার ভালো)

পঞ্চম চয়েস: রোবোটিক্স (কারণ, নতুন সাবজেক্ট। বলতেই পার্ট লাগে।)

 

চয়েস ফর্ম দেখলেই বোঝা যায় তার ফিজিক্স+ম্যাথ+বায়োলজি+প্রোগ্রামিং+কেমিস্ট্রি সকল কিছুতেই প্রবল প্যাশন। তোমার চয়েস এমন হলে বলছি, মাথা ঠিক কর। হয় চাকরির বাজার দেখ, নাইলে গবেষণার প্যাশন দেখ, নাইলে প্যাশন নিয়ে চাকরি করার সাবজেক্ট দেখ। খিচুড়ি বানাইয়ো না।

 

. Base Field নির্বাচন: প্রথমে নিজের জন্য প্যাশনের ভিত্তিতে একটি বেসফিল্ড নির্বাচন কর। তার পর সে ফিল্ডের সাবজেক্ট গুলোকে পছন্দ অনুসারে সাজাও। যেমন, বায়োলজি+কেমিস্ট্রি পিপাসু, গবেষণায় ইচ্ছুক ছাত্রের চয়ের ফর্ম হতে পারে:

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (কারণ, গবেষণার অসাধারণ ক্ষেত্র)

বায়োকেমিস্ট্রি (জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাথে ৯০% একই)

মাইক্রোবায়োলজি (বায়োটেকনলজির ফিল্ডে জিনপ্রকৌশল মাইক্রোবায়োলজির মিল অনেক)

ফার্মেসী (ওষুধ উৎপাদন, কেমিস্ট্রির জ্ঞান অর্জন, উপরের সাবজেক্ট গুলোর সাথে সম্পৃৎতা, কিন্তু অধিক চাকরির দিকে ঝোকার প্রবণতা)

কেমিস্ট্রি (ভবিষ্যতে মার্স্টাস করে বায়োকেমিস্ট্রি/ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং/ ড্রাগ ডিজাইন চলে যাওয়া)

***এই পাচটি চয়েসের উদ্দেশ্য মোটামুটি একই।

 

ম্যাথ-প্রোগ্রামিং আগ্রহীদের হতে পারে:

সিএসসি (প্রথমে কারণ সাম্প্রতিক প্রতিযোগিতায় সাফল্য, গুগোলে চাকরি ইত্যাদি)

আইটি (হার্ডওয়্যার সংক্রান্ত কম কোর্স)

EEE

পরিসংখ্যান

ম্যাথ

এগুলো কেবল নমুনা প্রদর্শন মাত্র। প্রত্যেকের চয়েস অন্যদের থেকে ভিন্ন। কেউ ভালো, কেউ খারাপ তা নয়। উপরের চয়েস গুলো আমার ব্যক্তিগত অভিমত মাত্র। এটা সাধারণ সত্য নয়।

 

. সাবজেক্ট চয়েস একবার দেয়ার পর কি তা পরিবর্তন করা যায়?

অবশ্যই। যতদিন ফরম পূরণের সময় থাকে ততদিন বাসায় বসে পরিবর্তন করতে পারবে। সময় শেষ হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি শাখায় যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করা যায়।

 

. সাবজেক্ট কিভাবে বরাদ্দ করা হবে?

 

প্রথমে সবার চয়েস ফর্ম অনুসারে ১ম তালিকা প্রকাশ করা হবে। (এতে মাত্র ২০০০ জনের মত শিক্ষার্থীর বিষয় আসতে পারে)

১ম তালিকার চান্সপ্রাপ্তদের সার্টিফিকেট জমা দিতে বলা হবে।

যারা জমা দিয়ে বিষয় নিশ্চিত করবে (অবশ্যই চয়েস ফর্মের ক্রমানুসারে। সেদিন গিয়ে তুমি ১ম চয়েসের বিষয় পাওয়া সত্ত্বেও ২য় বিষয়টি নিতে পারবে না) তাদের জন্য সেই সিটটি বুক করা হবে। এভাবে সকল সিট ফুরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়াটি চলবে। শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম অনুসারে সার্টিফিকেট জমার জন্য ডাকা হবে।

১ম তালিকা প্রকাশের পর যে সকল সিট খালি থাকবে তা পূরণের জন্য মেধাক্রমেরর পরবর্তী শিক্ষার্থীদের দিয়ে ২য় তালিকা প্রকাশ পেতে পারে। এক্ষেত্রে তোমার থেকে পেছনের মেধা ক্রমের অনেকে সাবজেক্ট পেলেও তুমি নাও পেতে পারো। কারণ, ধর রহিম ২০১৮ তম হয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োকেমিস্ট্রি, সিএসসি চয়েস দিয়েছে যা ১ম তালিকাতেই পূরণ হয়ে গেছে। অন্যদিকে করিম ২৫০০ হয়ে চয়েস দিয়েছে বোটানি, পরিসংখ্যান। আসন খালি থাকায় করিম হয়তো ২য় তালিকায় ডাক পাবে। কিন্তু, রহিম তার চয়েস ফরম এর কারণে ডাক পাবে না। কারণ, তার অবস্থান পেছনে থাকা সত্ত্বেও সে শুধু অধিক প্রতিযোগিতার বিষয়গুলোকে চয়েস দিয়েছে। সুতরাং, ফালতু চয়েস ফরম জমা দিও না। প্রতিটি সাবজেক্ট এর ক্রম তোমার জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিজের পজিশন বিচার করে তারপর সঠিকভাবে চয়েস ফর্ম পূরণ করো।

১ম তালিকায় সার্টিফিকেট জমা দেওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করলে সে সিটটি খালি হবে। তারপর মেধাক্রম এবং চয়েস ফর্ম অনুসারে সেই শূণ্য আসনটি পূরণ করা হবে। তাই ১ম লিস্টে ৫০ এর মধ্যে জিনপ্রকৌশল ফুরিয়ে গেলেও পরের লিস্টে জায়গা আবার খালি হবে। সুতরাং, শেষ তালিকা পর্যন্ত অপেক্ষা করে যেতে হবে।

এভাবে সকল সিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত একের পর এক তালিকা প্রকাশ, সার্টিফিকেট জমা, ভর্তি বাতিল চলবে।

 

কোটার শিক্ষার্থীদের কী করণীয়?

 

কোটা সুবিধা যাদের আছে তাদের জন্য প্রতি বিভাগেই কিছু সিট বরাদ্দ করা আছে। তাদের কে আলাদাভাবে সার্টিফিকেট জমা দেয়ার জন্য যেতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু কনফিউশন হতে পারে---

 

. ধরো, তুমি ২০০ তম হয়েছ। কোটা আছে। ১ম তালিকা প্রকাশের পর ২য় পছন্দের বিষয় পেয়েছ। তুমি অপেক্ষা কর। দেখ, যদি সাধারণ ভাবে পরবর্তী তালিকা গুলোতে তুমি ১ম পছন্দ পেয়ে যাও তাহলে সাধারণ ভাবেই ভর্তি হয়ে যাবে। যদি সব তালিকা প্রকাশের পর ১ম পছন্দ না পাও তাহলে কোটার সার্টিফিকেট জমার দিন গিয়ে কোটা ব্যবহার করে ১ম পছন্দটি নেবার চেষ্টা কর। অন্যথায় কোটা ব্যবহার করার দরকার নেই। কোটা ব্যবহার করা তোমার ইচ্ছা। তুমি না চাইলে ব্যবহার না করেও থাকতে পার।

 

. ধরো, কোন লিস্টেই তুমি (৬০০০তম) সাবজেক্ট পাও নি। সেক্ষেত্রে কোটার মাধ্যমে নিজের চয়েস ফর্ম অনুসারের সাবজেক্ট নিতে পারবে। তোমাকে অন্যান্য তালিকার দিন যেতে হবে না।

 

ভর্তি কীভাবে হতে হয়?

 

. নির্ধারিত দিনে তুমি তোমার কাগজপত্র-সার্টিফিকেট নিয়ে প্রথমে ডিপার্টমেন্টে যাবে। সেখানে একটা বিশাল রিসিট ফর্ম পূরণ করতে হবে। এসময় ডিপার্টমেন্ট একটা উন্নয়ন ফি গ্রহণ করবে। এর পরিমাণ বিভাগভেদে ভিন্ন হয়। ছোট বিভাগের ফি প্রায় হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বড় বিভাগগুলোর ফি মাত্র দেড়-দুহাজার টাকা হয়ে থাকে।

 

. রিসিট পূরণের পর বিভাগীয় চেয়ারম্যানের সাইন নিতে হবে। এরপর তোমাকে তোমার জন্য নির্ধারিত হলের অফিসে যেতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হলের সম্পত্তি। তুমি হলে থাকো কিংবা না থাকো, হলের সাথে অবশ্যই সম্পৃত্ততা রাখতে হবে। হলের অফিসে কিছু ফর্ম পূরণ করে ৫০০-১০০০ টাকা ফিস দিতে হবে। তোমার আইডি কার্ড হল থেকেই দেয়া হবে। সবশেষে তোমার রিসিটে হলের প্রোভোস্ট ্যার সাইন করে দিবেন।

 

. এর পর টিএসসির জনতা ্যাংকে রিসিটে উল্লেখিত অর্থ জমা দেয়ার মাধ্যমে তুমি ভর্তি কাজ সম্পন্ন করবে। প্রতিটি টাকা জমার রিসিট নিজে সংরক্ষণ করবে। এগুলো ফাইনাল পরীক্ষার সময় কাজে লাগবে।

 

কোন ধাপে কিছু না বুঝলে বিভাগের বড় ভাইয়া-আপুদের জিজ্ঞাসা করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ্যাগ দেয়া হয় না। এই ভর্তির কাজগুলো করতে তোমার এক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। ১০-১৫ হাজার টাকা হাতে রাখা ভালো।

 

ক্লাস শুরুর পর কী করবে?

 

কিছুদিন ক্লাস করে দেখলে সাবজেক্ট তোমার ভালো লাগছে না। তখন মাইগ্রেশন সুবিধা দেয়া হবে। সকল ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশন করে বিভাগ পরিবর্তন করতে পারবে।

সাবজেক্ট ভালো লাগলে ক্লাস কর, ফূর্তি কর... জীবনের এই তো সময়। টিএসসি-কলাভবন-কার্জন এখন তোমারও সম্পত্তি।

সবকিছুর পর এই পোস্টের লেখককে খুজে বের কর এবং এই বিশাল পোস্টটি লেখার জন্য তাকে এক কাপ চা খাওয়াও (:পি)

 

তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন অসাধারণ হোক। রইল শুভকামনা।



Contact

Hi there! Please leave a message and I will try my best to reply.

© 2024 Shamir Montazid. All rights reserved.
Made with love Battery Low Interactive.